কুয়োর পাশে রোম্যান্সের গারবেজ্
অঙ্কুর কুন্ডু
মেঘভর্তি
জানালার ফাঁকে দুপুর এসে রোদ দিয়েছিল কয়েকবার
বিশেষতঃ
(৩৩নং) উপপাদ্যে কম্পাসের ঘুলঘুলিতে ,
যখন
ঝিলিক মেরে নড়িয়ে দিল পেন্সিল– ছুটির ঘন্টা
কান
টেনে সুলগ্নাকে তুলল ৷
স্কুলের
গন্ডির ওপর যতটুকু মেঘ ছিল ফাঁকা আকাশে
তারা
চারিদিক আঁধারে ঢেকেছে ৷
মেখেছে
কিছু চোরকাঁটা ওড়নায় –জঙ্গল পেরিয়ে যখন সুলগ্না
কুয়োর
পাশে ভেসে দাঁড়াল ৷
আজ
সাত বছর পরে ,
সুলগ্না
আরও দূরে যখন চিঠি মারফত কথা ছোঁড়ে -
প্রেম
বলে কিছু নেই ,
কেবলই
শব্দগুলো দুম্-দাম্ পাপড়ির মত খসে চোখের পাশে ৷
জানিনা
কখন রেণু মেশে ;
না
কেশে এক বৃদ্ধা লাঠি হাতে ভিক্ষা করে
ফুলে
সাজানো ঠাকুর নিয়ে ,
কখনও
ডাক্-টিকিট না সেঁটে পাঁচ টাকা দিয়েছ তাকে ?
ধার
ঘেঁষে চোখ খুললে শুধুই প্রেমের কথা ছড়িয়ে
কুয়োর
খসখসে খোলা গায়ে ৷
সুলগ্না
লজ্জায় যতটুকু চোখ খুলেছিল- দেখেছে নগ্ন শরীর
স্কন্ধকাটা
হয়ে আটকে আছে
ঐ
খড়খড়ে সিমেন্টের গাঁথনি করা কুয়োর ছিদ্রান্বেষী বুকে
কুকুর
, বিড়ালের পেচ্ছাব শুঁকে ৷
কুয়োর
জলে সুলগ্না দেখেছিল এক ওড়না কিভাবে পচেছে
অপরটা
গলায় যত্নে আছে !
ওড়নার
চরিত্র বদলে গেছে ,
সে
এখন জায়গা হারিয়ে তালগোল পাকিয়ে পড়ে থাকে ,
সুউচ্চ
হিমালয়ের চূড়া এখনও
দাঁড়িয়ে
আছে ; কিন্তু ধরাছোঁয়ার বাইরে সুলগ্নার উন্মুক্ত বুকের মত ৷
বাতাসের
সাথে এখনও ওড়ে
সাত
বছর ও কয়েক ঘন্টা আগে পোড়া দেশলাইয়ের গন্ধ
রাঙা
চোখ মেলে ধরে
যা
স্তব্ধ করতে চায়- তা শহুরে রস্তর আনাগোনা ৷
সিদ্ধিগাছের
ফাঁকেই জ্বলছে লিপস্টিক মাখা শেষ সিগারেট ,
ধোঁয়া
গিলে পুড়েছে পাতা ,
‘+’-এর
চাপে পড়ে কিছু হতভাগা শেয়ার করছে অনামিকা !
অহমিকার
স্বভাবে কিছু নাম
জলে
পড়া কিসমিসের মত ফুলে উঠেছে- তারা শাহজাহান , মুমতাজ ৷
কিছু
নাম বৃষ্টির ঝাঁঝ !
কুয়োর
ধার বেয়ে শ্যাওলাগুলো যতটুকু উঠবে ভেবেছিল , তারা
ইটের
আঁচড়ে থমকে গেছে ৷
এখন
প্রতিটা রাত বড় ,
অপসূর
ও অনুসূরের হিসেব ভূগোলের পাতায় হোঁচট খাচ্ছে ,
তোমার
শরীরে আদর দিয়ে
অস্তিত্ব
খুঁজে বেড়াই আয়নার সামনে , কখনও সমান সামনে
তোমার
ওড়না এবং তুমি !
আদতে
আমি মানিকতলার ত্রিমুখী রেলব্রীজের তলায় দাঁড়িয়ে
ভাবি
কোনটা
ধরে পৌঁছাব আর
কোন
লোম ঘাম ফেলে ফুরফুরে হাওয়ায় উড়ে যাবে !
কুয়োর
কিছু দূরে যে পাঁচিলটা ঝোপের মাঝে হারিয়েছে
তার
উপরেও ভয়ডরহীন শরীর
উঁকি
মারছে ; কিছু অনামুখো ছেলে ও হতভাগী মেয়ে
গা
ঘেঁষে আদর চাইছে -
নিতম্বগুলোর
এক পশলা শক্তভাবে বসে , এবং এক পশলা
হাওয়ায়
ভেসে ক্রমশঃ অসাড় ,
কুয়োর
ধারে পেচ্ছাবের গন্ধ ক্রমশঃ জটিল ও রহস্যময়ী
ওটা
কোন্ ধরনের কুকুর !
সুলগ্না
, দু’দিন পরে আসব
তোমার
কাছে ; এখন একটি কুয়োর ধারে বসে খসড়া বানাচ্ছি ৷
কুয়োর
জলে তাকিয়ে ছিলাম
ঘন্টা
দু’য়েক ; জলের বদলে ইঁট আর পাথর , একটা
আবছা
কাপড়-কুচিও আছে ,
রংহীন
, মেদহীন ; আর গন্ধটাও আছে বুনোফুলের –
তোমার
জন্য ওড়না কিনেছি -
কারুর
দিকে না চেয়ে গলায় নিও –রোম্যান্সের টুকরো !
No comments:
Post a Comment